কেন বাংলা?

বাংলা আমার মাতৃভাষা। ইংরেজি আমি জানি, কিন্তু সীমিত। এতদিন যখনই বাংলায় ডেথ ডাইয়িং নিয়ে লেখার চিন্তা করেছি, মনের গভীরে এক ধরণের শংকা কাজ করেছে – পাঠক কই? শুধু ডেথ ডাইয়িং না, অনেক ধরণের লেখার ক্ষেত্রেই এই চিন্তা আমাকে ভয় দেখাতো। ভাবতাম, একবারে ইংরেজিতে লিখলে এগুলো উপযুক্ত পাঠকের কাছে পৌছা সহজ হবে। কিন্তু সমস্যা হল অন্য জায়গায় গিয়ে।

আমি বাংলায় কথা বলি। আমি বাংলায় ভাবি। আমি বাংলায় স্বপ্ন দেখি। আমার অবচেতন বাংলায় কথা বলে। আমার অনুভূতি বাংলায়ই সর্বোত্তম প্রকাশ পায়। তাই ইংরেজির সাথে তুলনা করলে, বাংলায় আমার প্রকাশ ক্ষমতা চার গুণেরও বেশি শক্তিশালী। উপযুক্ত পাঠক খোঁজার তাড়নায় এতদিন আমি আসলে নিজের পূর্ণ প্রকাশ ক্ষমতাকে দূরে সরিয়ে রেখেছি।

এটা ঠিক যে বাংলা লেখার পাঠকদের সিংহভাগই হয়তো আমার লেখার বিষয়বস্তুকে আকর্ষণীয় মনে করবেনা। কিন্তু আর যাই হোক আমার প্রকাশ ক্ষমতার সরবোচ্চ ব্যবহার পেতে মাতৃ ভাষায় লেখার কোন বিকল্প নেই। পাঠক পাই বা না পাই, নিজের সর্বোত্তম চিন্তা-বিশ্লেষণ প্রকাশের খাতিরে আমাকে মাতৃ ভাষায় লেখা চালিয়ে যেতেই হবে।

তবে এটা ভাবার কোন কারণ নেই যে আমি নিজেকে খুব ভালো মানের বাংলা লেখক হিসাবে ভাবছি। এটা পুরোটাই আপেক্ষিক – ইংরেজির তুলনায় বাংলায় আমার প্রকাশ ক্ষমতা। নিজের জীবদ্দশায় নিজের চিন্তা চেতনার সরবচ্চ প্রকাশের জন্যই তাই এই উদ্যোগ, বাজারে বিক্রির সাথে এর কোন সম্পরক নেই।

2 thoughts on “কেন বাংলা?

  1. ‘আমি’ বিষয়ক!
    মাইকেল মধুসুদন দত্তও দেশ ছেড়ে বিলেত গিয়েছিলেন ইংরেজিতে কবিতা লিখবেন বলে।কিন্তু ওখানকার বিদগ্ধ সমাজ তাঁকে ত গ্রহণ করলোইনা,বরং তাঁকে প্রত‍্যাখ‍্যান করল।শেষমেষ দেশে ফিরে তিনি বাংলায় কবিতা লেখায় মনোনিবেশ করলেন।শেষাবধি মেঘনাদ বধ কাব‍্য লিখে চিরস্মরনীয় হয়ে থাকলেন! তাঁর আরেক কীর্তি বাংলা কবিতায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রচলন! তুমিও কী তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চাও!

    Like

Leave a comment