আমি কে? আমার নাম অমুক, সে তো আমার নাম, সেটা আমার কিন্তু আমি নয়। আমি অমুকের সন্তান, সেটা আমার উৎস কিম্বা পারিপার্শ্বিক যোগাযোগের পরিচয়, কিন্তু আমি? সেটা কে?
আমি হাত, পা, মাথা, হৃদয়, অন্তর সমন্বয়ে তৈরি একজন। অর্থাৎ, এগুলো আমার অংশ, কিন্তু আমি ? আমি মানুষ, অনেকে এটা বলেও তৃপ্তি পান। এটা অনেকটা – বাসার সামনে স্কুল আর স্কুলের সামনে বাসার মতো কারণ যখন কেউ প্রশ্ন করবে দুটো কোথায়, তখন উত্তরটা কি?
আসলে ‘আমি’ এক অদৃশ্য। অর্থাৎ যা সম্পর্কে মানুষের কোন ধারণাই নেই, মানুষ শুধু জানে যে এটা আছে। এটা কোন ধর্মীয় আলোচনা না হলেও বলতেই হয় “আমি” ঠিক যেন কোরআনে বর্ণিত “রূহ” এর মতো যার সম্পর্কে মানুষের কোন জ্ঞান নেই।
যখন মানুষ নিজের আমিত্ব স্পষ্ট করে তুলতে চায়, তখনই সে খোঁজে চেহারা, সৌন্দর্য, সঙ্গি, আশ্রয়, ঠিকানা, ভালোবাসা, প্রতিষ্ঠা, খ্যাতি আরও কত কি। আমিত্বের খোঁজে মানুষ যতই ব্যস্ত হয়ে ওঠে, ততই জীবন কঠিন হয়ে ওঠে। তারপর কোন এক সময় সমাজের চোখে যখন কেউ আকাশ ছোঁয়া হয়ে ওঠে, তখনই হয়তো প্রথম বুঝতে পারে, আমিত্বের খোঁজ সফল হয়নি; তখনই হয়তো হতাশায় আর বেঁচে থাকতে মন চায়না।
আমি আছি, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট; এর বেশি যে কোন চিন্তা কল্পনাই যেন অকেজো। কেন, সেটা বলার ক্ষমতা আমার নেই। তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি, সুদীর্ঘকাল চেষ্টার পরও “আমি” কে তা জানা যায়নি। কেউ যদি জানতে সফল হন, দয়া করে জানাবেন। আর যদি আমার মতো বিফল হন, যা হবারই কথা, তাহলে “আমি”র ছবি আঁকতে নিজেকে আর জোরাজুরি করবেন না। যত এ প্রবণতা সমাজে বাড়বে, সমাজ ততই পাগল হয়ে উঠবে।
সুখি হউন।
Reblogged this on ত্রিভুজ.
LikeLike